পবিত্র মক্কা মদিনার দিনগুলি (পর্ব ৪) .....

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ মুজিবুল হক ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১১:৫৭:২৯ সকাল

... তাকে পথ ঘাট চিনিয়ে দিচ্ছে একজন ইউনিফর্ম পরিহিত পথ প্রদর্শক স্হানীয় ভাবে যাকে বলা হয় ''মুর্শিদ" . পথঘাট সম্পর্কে অজ্ঞ চালকদের রাস্তা চিনিয়ে দেয়ার জন্য প্রতি বাসে একজন করে অফিসিয়ালি এখানে বসবাসরত কক্সবাজার অঞ্চলের বাংলাদেশী অথবা বার্মিজ রোহিঙ্গা নিয়োগ দেয়া হয় তাকেই ''মুর্শিদ" বলা হয়. (নামেই মুর্শিদ আসলে সেও ভাল করে কিছু চিনেনা) দীর্ঘক্ষণ যানজট শেষে গুটি গুটি পায়ে আমাদের গাড়ী পবিত্র মিনার তাবুর সামনে পোঁছুল তখন রাত সাড়ে তিনটা সূর্যোদের আগে পৌঁছাতে পারায় মহান আল্লাহর অশেষ শুকরিয়া আদায় করলাম তাঁবু দেখে তো আমাদের সবার অবাক হয়ে যাবার অবস্হা. আরবীতে পবিত্র মিনাকে বলা হয় মদিনাতুল খাইমা অথবা তাঁবুর শহর (City Of Tent)



পবিত্র মিনা শরীফের তাঁবুর সারির দৃশ্য

এতদিন শুধু ছবিতে দেখেছি আজ সামনে থেকে দেখে বুঝলাম এক একেকটা তাঁবু কত বড়. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতি তাঁবুতে শতাধিক হাজী অবস্হান করতে পারেন পাশেই ৮টি করে ১৬ টি টয়লেটের অবস্হান.

পবিত্র মিনা শরীফের তাঁবু

এখানে অবস্হিত সব তাঁবুর অবয়ব একই ধরনের কোন ভিন্নতা নেই কয়েকটি তাঁবু নিয়ে একটি ক্যাম্প. আর এ ধরণের ক্যাম্পের সংখ্যা প্রায় ৮০০০. আমার মাকে তার স্হানে বসিয়ে দিয়ে আমিও আমার স্হানে বসে পড়লাম তারপর তাহজ্জুদ নামাজ আদায় শেষে জিকির আসকার শেষে ফজরের নামাজ শেষে কিছুক্ষণ বিশ্বাম শেষে ইসমাইল ও ফরিদকে নিয়ে পবিত্র মিনার বিভিন্ন স্হান ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম. কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি শেষে তাঁবুতে এসে নাশতা সারার পর বেশ কিছু সময় তাঁবুতে ইবাদত করে সময় কাটালাম. অবশেষে আমাদের কাফেলা প্রধান জনাব মোহাম্মদ আলী আনসারী সাহেব আমি ইসমাইল ও ফরিদকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন. যেদিকে চোখ যায় তাঁবু আর তাঁবু. সকল হাজীর একই পরিচ্ছেদ একই রব "লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক" ধ্বনিতে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত.

পবিত্র মিনা প্রান্তর!

দূরে বিশাল উচু উচু পাথরের পাহাড়ের সারি তিনি আমাদের নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে পবিত্র মিনার শেষ প্রান্তে এসে উপস্হিত হলেন এবং বললেন আর না এগোনোর জন্য কারন কিছু দূরেই পবিত্র মিনার সীমানা শেষ ও পবিত্র মুজদালিফার শুরু নিয়ম অনুযায়ী ৮ই জিলহজ্ব আমরা পবিত্র মিনার সীমানার বাইরে যেতে পারিনা অতপর সেখানে একটি ওয়াশরুমে সকলে গোসল করে তাঁবুতে ফিরে আসি তখন বেলা প্রায় ১২টা. এরপর জোহর নামাজ শেষে খাওয়া দাওয়া শেষে আবার জিকির শুরু হয় এভাবে আছর মাগরেব ও এশার সময় অতিবাহিত হয়. নিয়মানুসারে ৯ই জিলহজ্ব সূর্যোদয়ের আগে পবিত্র আরাফাত ময়দানে পৌঁছানোর কথা থাকলেও যানজটের কারনে পবিত্র মক্কা থেকে পবিত্র মিনা শরীফে আসার মত পূরবর্তী রাতেই ১৪ কিলোমিটার দূরে পবিত্র আরাফাত ময়দানে রওয়ানা হবার প্রস্তুতি নিই.

তাঁবুর ভিতরের দৃশ্য

এশার নামাজ শেষে খাওয়া দাওয়ার পর রাত ১০টায় তাঁবুর কিছুটা দূরে অপেক্ষামান গাড়ীতে পবিত্র আরাফাত ময়দানে রওয়ানা হবার জন্য আরোহন করি তবে পবিত্র মক্কা থেকে পবিত্র মিনা শরীফে আসার মত যানজট কম থাকায় রাত ২টার মধ্যে পবিত্র আরাফাত ময়দানে পৌঁছে যাই সেখানে পবিত্র মিনা শরীফের মত তাঁবু না থাকলেও অস্হায়ী ছাউনি ছিল কিন্তু আলোর ব্যবস্হা ছিল খুব কম.... রাতের বাকিটা সময় শুয়ে বসে কাটিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করলাম রাতে একমাত্র মা ছাড়া বাকী হাজীদের অবস্হান সম্পর্কে অন্ধকারে ছিলাম ভোরের আলো ফুটতেই সবার দেখা পেয়ে গেলাম. আমার মনে হচ্ছে যে আমি ভূলে অন্য ছাউনিতে অবস্হান করছিলাম...

( See also Facebook page পবিত্র মক্কা মদিনার দিনগুলি)

বিষয়: বিবিধ

১১০৭ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343110
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। আমি যতটুক জানি ফজর এর পর আরাফায় উপস্থিত হলেই হয়।
০২ মার্চ ২০১৬ রাত ০২:০১
299192
মোহাম্মদ মুজিবুল হক লিখেছেন : হ্যাঁ, আপনার ধারণা আংশিক সঠিক তবে ফজরের নামাজের পরে নয় ফজরের নামাজের আগেই পবিত্র আরাফাত ময়দানে পৌঁছাতে হয়. তবে সীমাহীন ভীড় ও যানজটের কারনে সাবধানতা অবলম্বন করে আগের রাতেই সবাই পবিত্র আরাফাত ময়দানে হাজির হয়ে যান..
346546
২০ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৪৫
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ভালো লাগলো।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File